bplus desk:
কুয়েতে ভিসা বাণিজ্যের নামে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচার চক্রে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আটক সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটর। কুয়েতের সিআইডির (ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।সোমবার (৮ জুন) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, কুয়েত থেকে প্রকাশিত আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে সোমবার বলা হয়েছে, দেশটির সিআইডির কর্মকর্তারা পাঁচ বাংলাদেশিকে জেরা করে জানতে পেরেছে তাদের প্রত্যেকেই কুয়েত যেতে সাংসদকে তিন হাজার দিনার করে দিয়েছিলেন। এছাড়াও প্রতি বছর তারা ভিসা নবায়নের জন্য সাংসদকে বাড়তি টাকা দিয়েছেন। তাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে সাংসদ কাজী শহিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগ এনেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
সাংসদের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিকেলে বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে একজন সাংসদ এ ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়াবেন তা একেবারেই অনভিপ্রেত। এমন সময় এই ঘটনাটা ঘটেছে যখন পৃথিবীর সব দেশ মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত। এমন সময়ে সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এতে লজ্জিত।’
দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী একটি অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে প্রবাসী ও বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে যেতে প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই হাজার ও আবাসিক খরচ ৫০০ কুয়েতি দিনার আদায় করা হয়।
জাতীয় নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় পার্টির সমঝোতার মাধ্যমে মনোনয়ন পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ নোমান। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন পাপুল। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন। পরে এক পর্যায়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আলোচনা ছিল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পাপুল ওই প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেন। বিষয়টি নির্বাচনের সময়ই বেশ আলোচিত ছিল।
প্রসঙ্গত এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস বাংলাদেশের এক সাংসদসহ তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কুয়েতের সিআইডির বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল, স্বতন্ত্র এই সাংসদসহ ৩জনের ওই চক্র অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে কুয়েতে পাঠিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে। কুয়েতের গণমাধ্যমগুলো অভিযুক্ত সাংসদের নাম প্রচার করেনি। তবে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত সাংসদের নাম কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল। তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ।