এম. আওলাদ হোছাইন ,বি-প্লাস টিভি ।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের একটি বেসরকারি কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক অসন্তোষের জের ধরে শ্রমিক-পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৫০এর অধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল থেকে চার জনের মৃত্যুর খবর তাদের নিশ্চিত করা হয়েছে।
“বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় সংঘর্ষটি সাড়ে সকাল দশটার দিকে শুরু হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। শহর থেকে অতিরিক্ত ফোর্স ঘটনাস্থলে গেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।
সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন বেতনভাতা নিয়ে নানা সমস্যা চলছিলো তবে আজকের সংঘর্ষটি কেন হলো সেটি হয়তো তদন্তের পর বলা যাবে। চট্টগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলছেন , এলাকাটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে ঠিক কতজন মারা গেছে বা আহত হয়েছে সেটি তিনি বলতে পারেননি।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি ।
যদিও বাঁশখালী উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শওকত হোসেন বলছেন, “এ মূহুর্তে চারটি মৃতদেহ আমাদের হাসপাতালে আছে। তারা হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। তাদের শরীরে গুলির চিহ্ন আছে। এর বাইরে আহত আছে আরও কয়েক জন রয়েছে “। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা হচ্ছিলো ।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যেই এলাকায় সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলছেন, “বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে শ্রমিক সরবরাহ করে বাইরের কোম্পানি। তাদের সাথে শ্রমিকদের টাকা পয়সা নিয়ে অনেকদিন ধরেই সমস্যা চলছিলো। ঘটনাটি কম্পাউণ্ডের ভেতরে। আমাদের সেখানে প্রবেশও করতে দেয়া হয়না। তবে এলাকাবাসী বলছে কয়েকদিন ধরেই বেতন ভাতাসহ বেশ কিছু দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিলো।
শ্রমিকরা তাদের বকেয়া পরিশোধের জন্যও দাবি জানিয়ে আসছিলো।বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ অন্তত ১০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছিল শ্রমিকরা এসব নিয়ে আজ তারা সেখানে অবরোধের ডাক দিয়েছিলো বলে জানান বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন এলাকার একজন অধিবাসী। “আজ সকালে শ্রমিকরা জমায়েত হচ্ছিলো। তখনি প্রকল্পের বিদেশী শ্রমিক ও পুলিশের সাথে স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপরই গুলির শব্দ শোনা যায়,” বলছিলেন স্থানীয় একজন ব্যক্তি। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে এলাকার জনমত শুরু থেকেই বিভক্ত হয়ে পড়ায় আগেও কয়েকবার সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।